অনলাইন ডেস্ক:
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের উপকণ্ঠে ভয়াবহ বন্যায় এক বৃদ্ধাশ্রমেই অন্তত ৩৮ জন বৃদ্ধ বাসিন্দা মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন চলাফেরায় অক্ষম।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মিয়ুন জেলায় অবস্থিত ওই বৃদ্ধাশ্রম বা নার্সিংহোমে পানির উচ্চতা বুকসমান হয়ে যাওয়ার পর উদ্ধারকারী দল সেখানে পৌঁছায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জরুরি সেবা কর্মীরা পানিতে হেঁটে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। নিহতদের বেশিরভাগই চলাফেরায় অক্ষম ছিলেন বলে জানিয়েছে চীনা গণমাধ্যম।
স্থানীয় প্রশাসন স্বীকার করেছে, জরুরি পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল এবং এই ঘটনা তাদের জন্য একটি ‘বেদনাদায়ক শিক্ষা’ ও ‘সতর্কবার্তা’ হিসেবে কাজ করেছে।
বেইজিংয়ে সাম্প্রতিক বন্যায় এখন পর্যন্ত মোট ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে চলতি গ্রীষ্মে তীব্র আবহাওয়া বিরাজ করছে। গত মাসের শুরুতে পূর্বাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ তাপপ্রবাহের পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও বন্যা দেখা দেয়।
বিবিসি বলছে, বন্যার সময় নার্সিংহোমটিতে প্রায় ৭৭ জন বাসিন্দা ছিলেন। পানির উচ্চতা প্রায় ২ মিটার বা ৬ ফুট হয়ে যাওয়ায় এদের মধ্যে প্রায় ৪০ জন সেখানে আটকে পড়েন বলে জানিয়েছে চীনা সংবাদমাধ্যম।
তাইশিটুন শহরে অবস্থিত এই নার্সিংহোমে মূলত শারীরিকভাবে গুরুতর অক্ষম, নিম্নআয়ের এবং সামাজিক সহায়তা পাওয়া প্রবীণদের দেখাশোনা করা হয়।
এক কর্মকর্তা বলেন, “বহুদিন ধরেই শহরের এই অংশটি নিরাপদ বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল, তাই এটি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আমাদের কোনও পরিকল্পনা ছিল না। এই ঘটনা প্রমাণ করে, আমাদের জরুরি পরিকল্পনায় ফাঁকফোকর ছিল। আমরা চরম আবহাওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম না। এই বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য সতর্কবার্তা হয়ে এসেছে।”
এদিকে, কাছাকাছি হেবেই প্রদেশেও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। চেংদে শহরে মারা গেছেন ৮ জন এবং এখনও ১৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
মূলত বেইজিংয়ের গ্রীষ্মকালীন বন্যা নতুন কিছু নয়। ২০১২ সালের জুলাই মাসে শহরে মাত্র একদিনেই ১৯০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল এবং সেসময় ৭৯ জন প্রাণ হারান। এবারের গ্রীষ্মে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলেও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।
একে